Saturday, April 20, 2024
Homeঅন্যান্যভারতের স্বাধীনতা দিবস রচনা | স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০২৩

ভারতের স্বাধীনতা দিবস রচনা | স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০২৩

ভারতের স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে বাংলা রচনা

স্বাধীনতা দিবস বাংলা রচনা | India Independence Day Essay in Bengali

ভারতের স্বাধীনতা দিবস রচনা | স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০২২
ভারতের স্বাধীনতা দিবস রচনা

সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আপনারা যারা ভারতের স্বাধীনতা দিবস সম্বন্ধে রচনা লেখার জন্য একটা ভালো ধরনের আর্টিকেলের সন্ধান করছেন, তাদের জন্য আমাদের আজকের এই পোস্ট। এই পোস্টটির মধ্যে খুব সুন্দর করে ভারতের স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে লেখা আছে।

“স্বাধীনতার-হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে,
কে বাঁচিতে চায় ?
দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে,
কে পরিবে পায় ।।

-রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়

ভূমিকা

দেশজননী ভারতবর্ষের শৃঙ্খলমুক্তির জীবনের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট। কয়েক শতক ধরে বহু বীর সন্তানের বুকের রক্ত ঝরানো ও বহু বীর শহীদের আত্মবলীদানের পর এসেছে মাতৃজননী ভারতমাতার জাতীয় মুক্তি তথা স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার অরুণোদয় সূচিত হয়েছে সুদীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যা প্রায় দুশো বছর ধরে চলা ব্রিটিশ রাজশক্তিকে পদানত করে।

স্বাধীনতা আন্দোলন-স্বাধীনতা প্রাপ্তি

ভারত বহু শতাব্দী ধরে মাতৃভূমির পরাধীনতার গ্লানি-স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে কখনই পরিত্যাগ করেননি তেমনি মনের মন্দিরে লালন করে আসা স্বাধীনতার আর্তিকে ফুরিয়ে যেতে দেয়নি। বরং ভারতমাতার দুঃসাহসী বীরসংগ্রামীরা আত্মোৎস্বর্গ দ্বারা মাতৃভূমি, সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে সহিংস কিংবা অহিংস আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অশেষ দুঃখকষ্ট বরণ করেছেন, নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেছেন এবং এমনকি মৃত‍্যুবরণও করেছেন। এহেন স্বাধীনতা ব্রিটিশ রাজশক্তির কৃপা বা অনুগ্রহের দান নয়, বরং আদায়কৃত বা অর্জিত।

স্বাধীনতাকে ঘিরে জাতির আশা-আকাঙ্খা

ভারত তো বহুরত্না বসুন্ধরা! আজ ভারতের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি সময় খণ্ডে অসংখ্য মানুষ, যাঁদের নাম হয়তো বা ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া যাবে না, সেই তাঁরাই এই দেশ গড়েছেন, একে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তবে অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির স্বপ্ন স্বার্থক হয়নি। ভারতজননী পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্তি পেয়েছে দু-বাহু কর্তিত আকারে। একথা অনস্বীকার্য, দেশবিভাগের ক্ষত পঁচাত্তর বছরেও রক্তক্ষরা, কবে নিরাময় হবে তা আগামী কালই জানে। ভারত স্বাধীন হয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্খা ছিল জনগণের। তবে এ কথা সত্য যে আধুনিক বিশ্বে প্রগতির ভিত আধুনিক পরিকাঠামোর উপর নির্ভরশীল যা দেশের গঠন মূলক কাজের মাধ্যমেই দেশবাসীর কাছে স্বাধীনতার স্বাদ পৌঁছে দেবে। একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের স্বপ্নগুলি এবং আকাঙ্ক্ষাগুলিকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা এখন আমাদের থামাতে পারবে না। আমাদের শক্তিই আমাদের প্রাণচাঞ্চল্য, আমাদের শক্তিই আমাদের ঐক্যবদ্ধতা, আমাদের প্রাণশক্তি ‘রাষ্ট্র সর্বাগ্রে, সর্বদাই সর্বাগ্রে’-র ভাবনা। এই সময় হল মিলিতভাবে স্বপ্ন দেখার। এই সময় হল সবাই মিলে সঙ্কল্প নেওয়ার। এই সময় হল সবাই মিলে চেষ্টা করার আর এই সময় হল আমাদের বিজয়ের পথে এগিয়ে চলার ।

পঁচাত্তর বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী

স্বাধীনতার পরবর্তী পঁচাত্তর বছরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। স্বাধীনতা প্রাপ্তির মুহূর্তে জওহরলাল নেহেরুর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ থেকে শুরু করে ১৯৫০ এ নতুন সংবিধান গৃহীত, ১৯৫১ তে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ, ১৯৫২ তে প্রথম সাধারণ নির্বাচন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬২ ও ১৯৬৫ তে যুদ্ধ, ১৯৬৯ তে ব্যাংক জাতীয় করণ, ১৯৭১ তে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ তে জাতীয় জরুরী অবস্থা ঘোষণা, ১৯৮৪ তে খালিস্তানী দমনে পাঞ্জাবে ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ সংগঠিত করা, ১৯৯২ তে বাবরি মসজিদ ধ্বংস, ১৯৯৮ তে কার্গিল যুদ্ধ, ২০১৬ তে নোটবন্দি, ২০২০ তে কাশ্মীরে ৩৭০এর বিলোপসাধন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এছাড়া বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি ক্ষেতে উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী হল ১৯৬৮ তে চিকিৎসাশাস্ত্র ও শরীরবিদ্যায় হরগোবিন্দ খুরানার নোবেল প্রাপ্তি থেকে শুরু করে বিশ্বশান্তিতে ২০১৪ তে কৈলাশ সত‍্যর্থী নোবেল প্রাপ্তি, ১৯৯২তে সত্যজিৎ রায়ের অস্কার বিজয়, ১৯৮৩ ,২০০৭ ও ২০১১ তে ক্রিকেটে বিশ্ববিজয় সম্মান, ১৯৭৫ তে উপগ্রহ আর্যভট্টের সঠিক নিক্ষেপণ, ২০১৩ তে প্রথম মঙ্গলযান প্রেরণ প্রভৃতি ঐতিহাসিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।

ধর্মীয়, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও জাতীয় সংহতি

ভারত বহু জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মিলনতীর্থ। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য এই সভ্যতার মূলমন্ত্র। কিন্তু উগ্র জাতীয়তাবাদ, ধর্মান্ধতা, উগ্র ভাষাপ্রীতি শুধু বিচ্ছিন্নতাবোধকে জাগিয়ে তোলেনি বরং দেশ ও জাতির ঐক্যের পরিপন্থী হয়ে উঠেছে, যা দেশকে করেছে কলঙ্কিত।

উন্নয়ন, ব্যর্থতা ও স্বপ্নভঙ্গ

বিগত পঁচাত্তর বছরে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে কৃষি, শিল্প ও আনুষঙ্গিক বিষয়গুলির অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও উন্নয়ন ঘটেছে, খাদ্যে দেশ কেবল স্বনির্ভরই নয়, উদবৃত্ত বলেও চিহ্নিত হয়েছে। কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, পরিবহন, খনিজ সম্পদ আহরণে অগ্রগতি ও উন্নতি অবশ্যই লক্ষনীয়। যা জাতীয় আয়ের সামগ্রিক বৃদ্ধির প্রশংসার দাবিদার। তবে কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের একাংশ আজও দারিদ্রসীমার নিচে অনাহারে, অর্ধাহারে কিংবা চিকিৎসার অভাবে কিছু সংখ্যক মানুষের দিন কাটে। কোটি কোটি শিক্ষিত মানুষের বেকারত্বের যন্ত্রণা, হতাশা ও ব্যর্থতার গ্লানি দিনে দিনে করেছে বিপন্ন – যা অস্বীকার করার উপায় নেই।

উপসংহার

আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভারতবর্ষ বিগত পঁচাত্তর বছরে গৌরবোজ্জ্বল ক্রিয়াকর্মের দৃষ্টান্ত রেখেছে যা দেশের বীরত্বের নাজির গড়েছে। তা সত্ত্বেও কিছু স্বপ্নভঙ্গের হতাশা, ব্যর্থতা নৈরাশ্যের গ্লানি দেশবাসীর মনকে ছুঁয়ে গেছে।

■ আরও পড়ুনঃ ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বক্তব্য

RELATED ARTICLES

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

popular posts