Thursday, April 25, 2024
Homeজীবনীবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী | Bibhutibhushan Bandyopadhyay Biography in Bengali

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী | Bibhutibhushan Bandyopadhyay Biography in Bengali

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী PDF | Bibhutibhushan Bandyopadhyay Biography in Bengali PDF

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

ভারতীয় বাঙালি কথা-সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে জানার জন্য যারা ভালো একটা প্রতিবেদনের অনুসন্ধান করছেন, তাদের সুবিধার্থে আমাদের আজকের এই পোস্ট। পোস্টটির মধ্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী সম্পর্কে খুব সুন্দর করে আলোচনা করা আছে।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী

“গৌরীকে দেখাবেন ? আমার গৌরী ! একটি বার শুধু দেখা করিয়ে দিন !” -ভাবছেন কার কথা বলছি; তাহলে জানুন ইনি হলেন গ্রাম্য পল্লী জীবনের গৌরীর প্রেমিক স্বামী তথা অসামান্য কথাশিল্পী, ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরিজিত’ ও ‘চাঁদের পাহাড়’ উপন্যাস যার অমর সৃষ্টি।

নামবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম১২ই সেপ্টেম্বর ১৮৯৪
জন্মস্থানমুরাতিপুর গ্রাম, উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা, বাংলা প্রদেশ (এখন পশ্চিমবঙ্গ)
জাতীয়তাবাঙালি
মৃত্যু১লা নভেম্বর ১৯৫০
ব্যক্তি জীবন

অমর কথা-সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১২ই সেপ্টেম্বর ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতবর্ষের বাংলা প্রদেশের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঁচরা পাড়ার সন্নিকট ঘোষপুর-মুড়াটিপুর গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৃণালিনী দেবীর পঞ্চম পুত্রের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তাঁর পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত সংস্কৃত বিষয়ক পন্ডিত। মহানন্দ বাবু পান্ডিত্য ও কথকতার জন্য শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। বিভূতিভূষণ মহাশয় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে গৌরী দেবী ও পরে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে রমা দেবীর সাথে দাম্পত্য জীবনে আবদ্ধ হন। বাঙালী ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের একমাত্র সন্তান।

শিক্ষা জীবন

পিতা মহানন্দ মহাশয়ের কাছে শিক্ষার হাতেখড়ির মাধ্যমে লেখাপড়ার পাঠ শুরু হয়। ছোট থেকেই মেধাবী হওয়ার কারণে নিজ গ্রামে পাঠশালায় পড়াশোনার পর বনগ্রাম উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয়ে অবৈতনিক শিক্ষার্থী হিসাবে ভর্তি হন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে বনগ্রাম হাইস্কুল থেকে এনট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার রিপন কলেজ (সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আইএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে রিপন কলেজ থেকেই বি.এ পরীক্ষায় ডিস্টিংশন সহ উত্তীণ হন। উচ্চতর পড়াশোনার জন্য এম.এ ও আইন বিষয়ে ভর্তি হন। কিন্তু পরিবারের চাপে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে পড়াশোনা ছেড়ে দেন।

কর্ম জীবন

হুগলী জেলার জাঙ্গিপাড়া গ্রামের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। এরপরে সোনারপুর হরিনাভী স্কুলেও শিক্ষাকতা করেন। ঐ সময়ে গৌরী দেবীর মৃত্যু হলে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন এবং গোরক্ষিণী সভার প্রচারক হিসাবে বাংলা, ত্রিপুরা ও আরাকানের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। সেখান থেকে ফিরে এসে খেলৎচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে গৃহ শিক্ষক ও সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করেন, ওনার সুপারিশ ক্রমে ভাগলপুর সার্কেলের সহকারী ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। ভাগলপুরে প্রবাসী হিসাবে বসবাস করতে থাকেন, এখানেই তাঁর অমর উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ রচিত হয়। এভাবে কিছুদিন কাটানোর পর ধর্মতলায় খেলাৎচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পরে বনগাঁর নিকট গোপালনগর হরিপদ ইনস্টিটিউশনে আমৃত্যু জীবন পর্যন্ত শিক্ষাকতা করতে থাকেন।

সাহিত্যচর্চা

১৯২১ খ্রিস্টাব্দে প্রবাসী পত্রিকায় উপেক্ষিতা নামক গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়েই তাঁর সাহিত্যিক জীবনে সূত্রপাত ঘটে। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ভাগলপুরে বসবাস কালীন সময়ে তাঁর সাহিত্যের অমর উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ রচনা শুরু করেন ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে শেষ করেন। ১৯২৮-২৯ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্যিক সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় মাসিক ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায় প্রকাশ করলে জনসমাজের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এটিই ছিল বিভূতিভূষণ মহাশয়ের প্রথম ও সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকৃতী যা পরবর্তি কালে চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। এছাড়াও তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘অপরিজিত’ রচনা করেন, যা ছিল পথের পাঁচালী উপন্যাসের পরবর্তী অংশ। এই দুই উপন্যাসের কাহিনীই ছিল তাঁর জীবনকেন্দ্রিক। চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসের কাহিনীর মাধ্যমে দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যা ভীষণ ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কিশোর পাঠ্য ‘চাঁদের পাহাড়’ উপন্যাস ভারতবর্ষের তরুণদের কাছে অতি জনপ্রিয় ও রোমাঞ্চকর উপন্যাস। ২০১৩ সালে চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখার্জির পরিচালনায় ‘চাঁদের পাহাড়’ চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে যথেষ্ঠ খ্যাতি অর্জন করে। তাঁর কয়েকটি সাহিত্য সৃষ্টি হল –

  • উপন্যাসঃ পথের পাঁচালী, অপরাজিত, দৃষ্টি প্রদীপ, আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, বিপিনের সংসার, দুই বাড়ী, ইছামতী, দেবজান, কেদার রাজা, অশনি সংকেত, দম্পতি ইত্যাদি।
  • গল্প সংকলনঃ মেঘমোল্লা, মৌরিফুল, যাত্রা বদল, জন্ম-মৃত্যু, নবাগত, তালনবমী, অসাধারণ, বিধুমাস্টার, উপলখন্ড, জ্যোতিলিঙ্গন, অনুসন্ধান, ছায়াছবি ইত্যাদি।
  • কিশোর পাঠ্যঃ চাঁদের পাহাড়, হিরা মানিক জ্বলে, মরণের ডঙ্কার বাজে ইত্যাদি।
  • ভ্রমণ কাহিনী মূলকঃ অভিযাত্রিক, স্মৃতির লেখা, তৃনাঙ্গুর, হে অরণ্য কথা কও ইত্যাদি।
পুরস্কার ও সম্মাননা

বিখ্যাত ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ইছামতী উপন্যাসের জন্য ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে মরণোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এছাড়াও ওনার জন্মভূমি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বনগাঁ মহকুমার পারমাদান বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের নাম লেখকের সম্মানার্থে ‘বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ রাখা হয়েছে।

বার্ধক‍্য জীবন ও প্রয়াণ

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ জীবনের কয়েকটি বৎসর তাঁর অতি প্রিয় পিতৃভূমি ব্যারাকপুর ও তাঁর ভালোবাসার শেষ চিহ্ন গৌরীকুঞ্জতে কাটিয়েছেন। এসময়ে তিনি সাহিত্য চর্চায় যথেষ্ট শ্রীবৃদ্ধি করেছিলেন।
১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর বিহারের ঘাটশিলায় (অধুনা ঝাড়খণ্ডের) ৫৬ বৎসর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী PDF

File Details :


File Name : Bibhutibhushan Bandyopadhyay Biography
Language : Bengali
No. of Pages : 02
Size : 01 MB

আরও দেখুন :
RELATED ARTICLES

4 COMMENTS

  1. খুব সুন্দর একটি পোস্ট , এটির দ্বারা অনেক কিছু জানতে পারলাম এবং খুবই লাভবান হয়েছে । আপনাদের ধন্যবাদ এরকম পোস্টগুলি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য । এরকম আরো অনেক অনেক পোস্ট চাই ।

    ধন্যবাদ।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

popular posts