সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ জীবনী PDF | Sarvepalli Radhakrishnan Biography in Bengali PDF

সুপ্রিয় বন্ধুরা,
যারা স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ সম্পর্কে জানার জন্য ভালো মানের আর্টিকেলের অনুসন্ধান করছেন, তাদের সুবিধার্থে আজকের পোস্টে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ জীবনী টি শেয়ার করলাম।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর জীবনী
“শিক্ষা মোদের প্রাণের গুরু
আদর্শের-ই প্রতীক।
তার দেখানো পথে হেঁটে
ছাত্র-ছাত্রীরা পথিক।”
এই মহান প্রতিভার পেশায় কখনো কোনো অভাব হয় না। ঠিক তেমনি আমাদের ভারতবর্ষের শিক্ষার্থী সমাজ আজও যাঁদের নিয়ে গর্ব করে, সেই শিক্ষাকেন্দ্রীক মনীষীদের প্রধান পুরুষ হলেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। তিনি শুধুমাত্র ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না তিনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক। তাঁর দেশপ্রেম, ভারতীয়তা বোধ, আদর্শ রাষ্ট্রনেতৃত্ব, তাঁর সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবনধারণ, চেতনাশীল সুশিক্ষা এবং ছাত্রদের সঙ্গে অনুকরণীয় আচরণই ছিল প্রধান। এই অসাধারণত্বের জন্যই ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের এত খ্যাতি।
নাম | ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ |
জন্ম | ৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ |
জন্মস্থান | তিরুট্টানি, তামিলনাড়ু, দক্ষিণ ভারত |
মৃত্যু | ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭৫ |
পূর্বসূরী | রাজেন্দ্র প্রসাদ |
উত্তরসূরী | জাকির হুসেন |
ব্যক্তি জীবন
আদর্শ শিক্ষক তথা ভারতরত্ন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ৫ই সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তামিলনাড়ুর পল্লী অঞ্চলের তিরুট্টানি গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সর্বপল্লী বীরস্বামী পেশায় একজন বিদ্বান ব্রাহ্মণ পন্ডিত ছিলেন এবং মাতা সীতাম্মা ছিলেন গৃহপত্নী। তিনি একে একে শৈশব, কৈশোর জীবন পাড় করে যৌবন পর্যায়ের প্রথম ভাগে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে শিবুকামু দেবীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে আবদ্ধ হন এবং পাঁচ কন্যা ও একপুত্রের প্রতিপালন করেন। মহান ইতিহাসবিদ সর্বপল্লী গোপাল ছিলেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের একমাত্র পুত্র।
শিক্ষা জীবন
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ প্রথম থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিরুট্টানি গ্রামে শিক্ষায় হাতেখড়ি করার পর তার পিতা তিরুপতিতে লুথারান খ্রিষ্টান মিশন স্কুলে ভর্তি করান, সেখানে ১৮৯৪ থেকে ১৯০০ সাল যাবৎ শিক্ষা অর্জনের পর ভেলোরের এক কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর মাদ্রাজে, মাদ্রাজ খ্রিষ্টান কলেজ পরবর্তী শিক্ষা শেষ করেন। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে দর্শনশাস্ত্র বিষয়ের ওপর স্নাতোকোত্তর (MA) করেন তার বিষয় ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’। শিক্ষা ক্ষেত্রে আজীবন কাল বৃত্তি লাভ করেন।
কর্ম জীবন
কঠোর পরিশ্রমের মাধমে দরিদ্র পরিবারের অত্যন্ত মেধাবী শান্ত ছাত্রটি ১৯০৯ সালে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে দর্শনের শিক্ষক হন, ১৯১৬ সালে দর্শনের সহকারী অধ্যাপক হন। ১৯১৮ সালে মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন ভাবে অধ্যাপনা শুরু করেন। মাদ্রাজ যে কলেজ থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন পরবর্তীতে সেই কলেজেই উপাচার্য হন। তিনি বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হন। এমনকি তিনি দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার আমন্ত্রণও পেয়েছিলেন।
লেখনী
ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এক সময়ে তিনি বিভিন্ন পত্রিকাতেও লেখালেখি করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলির মধ্যে প্রথম The philosophy of Rabindranath Tagore এবং দ্বিতীয় গ্রন্থ The Reign of Religion in Contemporary Philosophy’s প্রকাশিত হয়।
রাজনৈতিক জীবন
পরাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হন। পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করলে জওহরলাল নেহেরু সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বিশেষ রাষ্ট্রদূত হিসাবে কূটনৈতিক কাজগুলি সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ জানালে তিনি স্বমহিমায় কথা মান্যতা দিয়ে কাজে লিপ্ত হন। এসময় তিনি ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত গণপরিষদের সদস্য হিসেবেও কাজসম্পাদন করেন। তার সফল শিক্ষাজীবনের পর রাজনীতিতেও কর্মকান্ড ও আচরণের ভূয়সী প্রশংসার অধিকারী হন। সংসদে একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন।
স্বাধীন ভারতের সংবিধান রচনার প্রাক্কালে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ১৩ই মে ১৯৫২ সাল থেকে ১৩মে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন। এসময়ে তিনি শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে চেয়েছিলেন। এরপর তিনি ১৩মে ১৯৬২ সালে স্বাধীন ভাবে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, ১৩মে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত কার্যক্ষম থাকেন। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মাধমে যেমন একদিকে চীন ও পাকিস্তানের সাথে ভারতের যুদ্ধে চীনের কাছে ভারতের পরাজয় অন্যদিকে দুই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুও ঘটলে রাষ্ট্রে অচল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে বলা বাহুল্য তার রাষ্ট্রপতি কার্যক্রম সময়কালে তার গুণমুগ্ধ ছাত্রছাত্রী ও বন্ধুরা তার জন্মদিন বিশেষ ভাবে পালন করতে চাইলে তিনি বলেন জন্মদিনের পরিবর্তে এই ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদযাপিত হয় তবে তিনি বিশেষ রূপে অনুগ্রহ লাভ করবো। সে সময় অর্থাৎ ১৯৬২ সাল থেকে আজও তার জন্মদিনটিকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়।
পুরস্কার-সম্মান
আদর্শ শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনৈতিকবিদ ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকারের দ্বারা নাইট উপাধিতে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি ১৯৩৩-১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাঁচবার সাহিত্য বিভাগে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন এবং ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ একাডেমির ফেলো হিসাবেও মনোনীত হন। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন পুরস্কার, ঐ বছরই পেয়েছেন জার্মানী বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের সাম্মানিক পুরস্কার। ১৯৬১ সালে German Book Trade তত্ত্বাবোধনে পেয়েছেন শান্তি পুরস্কার এবং ১৯৬৮ সালে পেয়েছেন সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার।
জীবনাবসান
বিরাট প্রতিভার অধিকারী ভারতরত্ন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ১৭ই এপ্রিল ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ জীবনী PDF
File Details :
File Name : সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ জীবনী PDF
Language : Bengali
No. of Pages : 02
Size : 0.8 MB