Saturday, November 23, 2024
Homeজীবনীকাজী নজরুল ইসলামের জীবনী | Kazi Nazrul Islam Biography in Bengali

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী | Kazi Nazrul Islam Biography in Bengali

কাজী নজরুল ইসলাম জীবনী

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী PDF | Kazi Nazrul Islam Biography in Bengali PDF

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী
কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী

আজ আপনাদের কাছে উপস্থাপন করলাম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী। যেটিতে খুব সুন্দরভাবে সহজ-সরল ভাষায় কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আমরা আশা রাখছি এই প্রতিবেদনটি আপনাদের কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।

কাজী নজরুল ইসলাম
নামকাজী নজরুল ইসলাম
জন্ম১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ (২৪শে মে ১৮৯৯)
জন্মস্থানচুরুলিয়া, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১২ই ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ (২৯শে আগস্ট ১৯৭৬)
মৃত্যুস্থানঢাকা, বাংলাদেশ

“মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান,
মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।”

বাংলা সাহিত্য জগতে গৌরবময় ইতিহাস খুব সংক্ষিপ্ত নয়। এই গৌরবোজ্জল ধারাতেই বিংশ শতাব্দীর বাংলার সাহিত্য জগতে রবিতাপে হারিয়ে না গিয়ে প্রথম রবীন্দ্রনাথের মায়াজাল ভেঙে বিদ্রোহের নিশানা উঁচিয়ে বাঙালী কবি ও সঙ্গীতকার রূপে কাজী নজরুল ইসলামের আগমন ঘটে। তার হাত ধরে এপার-ওপার বাংলার বাঙালীজাতির বিদ্রোহীর ছলে সাহিত্যের প্রাণময়তার শিকড়ের সন্ধান ঘটেছে। প্রেমিক কবির ‘নজরুল গীতি’ ভরিয়ে তুলেছে হিন্দু-মুসলমান মিলন মৈত্রীর গান। তাঁর এই বহুধা খ্যাতির সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার বিচলন ঘটলেও তার প্রধান পরিচিতি তিনি একজন কবি তথা বিদ্রোহী কবি।

জন্ম ও বাল্য পরিচয়

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪শে মে ব্রিটিশ ভারতবর্ষের বাংলা প্রেসিডেন্সির চুরুলিয়া গ্রামে (বর্তমান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া ব্লকের চুরুলিয়া গ্রাম) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কাজী ফকির আহম্মেদ ও জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান। বাল্যকালে কাজী নজরুল ইসলাম এলাকায় ‘দুখু মিয়া’ নামেই বেশি পরিচিত ছিল।

শিক্ষা জীবন

শৈশবে প্রারম্ভিক শিক্ষা শুরু করলেও ১৯০৮ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলাম পিতৃহারা হলে অভাব অনটনের বশবর্তী হয়ে তার শিক্ষাগ্রহণে ভাটা পড়ে। এই সময় কাজী বজলে করীম চাচার অধীনে কিছুদিন লেখাপড়া শেখেন পরে স্থানীয় মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন, ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যায়ন শুরু করেন। এসময় মক্তবে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মোক্তবেই শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন।

কর্ম জীবন

পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনে শিক্ষাজীবন বাঁধাগ্রস্থ হয়ে মাত্র দশ বছর বয়সেই কর্মজীবন শুরু করতে বাধ্য হন। মক্তবে শিক্ষকতার কাজ শুরু করার পাশাপাশি হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক ও মসজিদের মুয়ানযিন হিসেবে কাজ শুরু করেন। এসব কাজের মধ্য থেকেই পরবর্তীকালে সাহিত্য কর্মে বিপুলভাবে আকৃষ্ঠ হয়ে পড়ে।

তবে বাল্য বয়সের স্থানীয় লোকসঙ্গীতের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা বশবর্তী হয়েই লেটো (ভাম্রমান নাট্য দল) দলে যোগদান করেন। তারপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রাককালে সৈন্যদলে যোগ দেন করেন। এছাড়াও মোক্তবেও শিক্ষকতার কাজও করেন। এছাড়াও তিনি সাংবাদিকতার কাজও করেন।

মানুষের কবি

সমসাময়িক পেক্ষাপট বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন-প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাকপালে তার মনকে ভাড়াকাতর না করে সকল মানবজাতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত থেকে নিজস্ব স্বাধীন মতবাদকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন জনমানবে। তার ‘আমার কৈফিয়ৎ’ কবিতা তারই ফলশ্রুতি। তিনি সদাসর্বদা মানুষের সমান অধিকার ও সম্ভবনা, মানুষের চিরন্তন আশা, সুখ-দুঃখ, প্রেম-প্রীতি, বীর-বীরত্বের প্রতি জোর দিয়ে একের পর এক কবিতা রচনা করে গেছেন। তাই তাকে ‘মানুষের কবি’ বলেও আখ্যায়িত করা হয়।

বিদ্রোহী কবি

মহামানবের তীরে মানবিক গুনসম্পন্ন কবিচিত্ত মানুষের উপরে নির্যাতন, শোষণ ও অবিচারের প্রতিবাদ করেছেন তার প্রতিবাদের সুর লেখনীর মাধ্যমে। তিনি অরাজনৈতিক ভাবেই বিদ্রোহের উচ্চকণ্ঠে জাগরিত হয়ে মানুষের মনে প্রতিবাদের জয়গান জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন। অগ্নিবীর (১৯২২), ভাঙার গান (১৯২৪) ও বিষের বাঁশি (১৩৩১) মতো লেখনী তারই ফলশ্রুতি।

সাহিত্য কীর্তি

ঠিক রবির কিরণ যখন মধ্য গগনে তখন রবি তাপে হারিয়ে না গিয়ে বিদ্রোহীর বার্তা উঁচিয়ে লেখনীর মধ্যে নিয়ে এলেন অপ্রতিম প্রতিভা। যার সাহিত্য কৃতি দুই বাংলার মানুষকে দিয়েছেন অনাবিল প্রেম-প্রীতি, সাম্যবাদী নজরুল গীতি। দোলনচাঁপা (১৯২৭), চক্রবাক (১৯২৯), সিন্ধু হিল্লোল (১৯২৭), অগ্নিবীণা (১৯২২) -র মতো রচনা সংকলন এছাড়াও ১৯২২ সালের ব্যথার দান, যুগবাণীর মতো গল্প সংকলন প্রভূত খ্যাতি এনে দিয়েছিল।

চলচ্চিত্র

নজরুল ইসলাম ‘ধুপছায়া’ নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন। এছাড়া পাতালপুরী, গোরা, রজতজয়ন্তী, সাপুড়ে, নন্দিনী, অভিনয় -এর মতো কয়েকটি নামকরা চলচ্চিত্রের গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। বলাবাহুল্য চৌরঙ্গী হিন্দিতে নির্মিত হলেও সেটার জন্য তিনি ৭টি হিন্দি গানও লেখেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক বাংলা সাহিত্যর  ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ পাওয়ার পর ১৯৬০ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে ভূষিত হন। এছাড়া ২০১২ সালে আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে, তার নামকে গুরুত্ব দিয়ে দুর্গাপুরে ‘কাজী নজরুল ইসলাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ নামকরণ করা হয়েছে। তার পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলাম সরণী ও মেট্রো স্টেশনেরও নামকরণ করা হয়েছে।

১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্র নজরুলকে সে দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাহাকে সাম্মানিক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করেন। এছাড়া নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন।

জীবনাবসান

শেষ বয়সে দীর্ঘদিন বাকরুদ্ধ অবস্থায় অনেক কষ্টে দিনপাত করতে করতে বুকে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে আগস্ট পরলোক গমন করেন।

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী PDF

File Details :


File Name : Kazi Nazrul Islam Biography
Language : Bengali
No. of Pages : 03
Size : 01 MB

Also Check :
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

popular posts