মাদার তেরেসার জীবনী PDF | Mother Teresa Biography in Bengali PDF
আজকের পোস্টে আলবেনীয় বংশোদ্ভুত ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী এবং ধর্মপ্রচারক মাদার টেরিজা বা তেরেসার জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করলাম। যেটিতে মাদার তেরেসার প্রারম্ভিক জীবন, কর্মজীবন, বার্ধক্য জীবন খুব সুন্দরভাবে বর্ণিত আছে।
মাদার তেরেসা
“কেবল সেবা নয়, মানুষকে দাও তোমার হৃদয়
হৃদয়হীন সেবা নয়, তারা চায় তোমার অন্তরের স্পর্শ।”
দুর্ভিক্ষের কালোছায়া যখনই নেমে এসেছে বা এক মুঠো অন্নের হাহাকার বুকফাটা কান্না যখনই ফুঁটে উঠেছে- ঠিক তখনই যুগ যুগ ধরে আবির্ভুত হয়েছেন ঈশ্বরের মূর্তিমতী জীবন্ত বিগ্রহ। তেমনই মাতৃহৃদয় মোহীয়সী অ্যাগনিশ গঞ্জা বোজাঝিউ ওরফে মাদার টেরেজা আবির্ভূত হয়েছেন।
আসল নাম | অ্যাগনিস গঞ্জা বোজাঝিউ |
পরিচিত নাম | মাদার তেরেসা |
জন্ম | ২৬শে আগস্ট ১৯১০ |
জন্মস্থান | ইউস্কুপ, অটোম্যান সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ |
প্রারম্ভিক জীবন
মেরি টেরিজা বোজাঝিউ ২৬শে আগস্ট ১৯১০ সালে যুগোস্লোভিয়ার স্কোপিয়ে শহরে এক কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মসূত্রে আলবানিয় জাতি হওয়ায় খ্রিস্টধর্ম দীক্ষা ও সেবাধর্মে দীক্ষিত হয়ে আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত তিনি সেখানেই কাটান।
কর্মজীবন
১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে সন্ন্যাসিনীর ব্রত গ্রহণ করে তিনি আয়ারল্যান্ড হয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচার অভিযানে আসেন। ভারতে আসার পরই দার্জিলিং এ স্কুল শিক্ষিকা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর কলকাতার এন্টালিতে সেন্ট মেরিজ হাইস্কুলে ভূগোল শিক্ষিকা হিসাবে কাজ শুরু করেন, পরে লরেটো স্কুলেও যোগদান করেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার প্রাককালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পান। এখানে থাকা অবস্থায় পঞ্চাশের মন্বন্তর, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা শহরে নেমে আসে অবর্ণনীয় দুঃখ আর মৃত্যুর মিছিল যা মাদার টেরিজার মনে এনেছেন গভীর ক্ষতি। তার পরবর্তীতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে দারিদ্রের মধ্যে ধর্মপ্রচার শুরু করার মধ্য দিয়ে লরেটো অভ্যাস ত্যাগ করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ‘ডায়োসিসান ধর্মপ্রচারকদের সংঘ’ করার জন্য ভ্যাটিকানের অনুমতি লাভ করেন। এই সংঘই পরবর্তীতে ‘মিশনারিস অফ চ্যারিটি’ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে কলকাতার মতিঝিল বস্তির দুঃস্থ ও দুর্গত মানুষদের দেখে হতদরিদ্র এবং দুরারোগ্য মানুষদের আশ্রয় ও চিকিৎসা দিতে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার কালীঘাটে এক পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দিরকে ‘কালীঘাট হোম ফর দ্যা ডাইং’ -এ রূপান্তরিত করেন, পরবর্তীতে ইহার নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘নির্মল হৃদয়’। এসময়ই মাদার টেরিজা টিটাগড়ে কুষ্ঠরোগীদের সেবার জন্য একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম দেন ‘শান্তি নগর’। তিনি মিশনারিস অফ চ্যারিটির উদ্যোগে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কুষ্ঠরোগের চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করেন। এছাড়াও অনাথ শিশুদের লালন পালন করতেন এবং তাদের জন্য থাকার জন্য ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ‘নির্মল শিশু ভবন’ স্থাপন করেন যা বসতিহীন শিশুদের কাছে এনে দিয়েছিল একধরণের স্বর্গ।
পুরস্কার
মাদার টেরিজার খ্যাতি যে শুধুমাত্র ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ছিল তা বলার বাহুল্য রাখে না। সেবা ধর্ম-কর্মের জন্য ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম মহিলা হিসাবে ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’ পান ও ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেন। নোবেল ও ভারতরত্ন পুরস্কার ছাড়াও তিনি পেয়েছেন ১৯৬২ তে ‘পদ্মশ্রী পুরস্কার’, ১৯৭২ তে ‘নেহেরু পুরস্কার’, ১৯৭৮ তে পেয়েছিলেন ‘বালজান পুরস্কার’ ও ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে পেয়েছেন ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রীডম’। এছাড়াও বিশ্বভারতীর ‘দেশিকত্তম উপাধি’ এবং ভ্যাটিকান সিটির ২৩তম পোপ জন পুরস্কার পান।
বার্ধক্য জীবন ও মৃত্যু
আত্ম মানুষের নিঃস্বার্থ সেবা ও অক্লান্ত কর্মপ্রচেষ্টার পরও তার বার্ধক্য জীবন মোটেও সুখদায়ক ছিল না। ১৯৮৩ সালে পোপ জনপল ২ এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে রোম সফরের সময় মাদার টেরিজার প্রথম হার্ট অ্যাটাক হয়। ১৯৮৯ সালে আবারও হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর তার দেহে কৃত্রিম প্রেসমেকার স্থাপন করা হয়। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোতে থাকার সময় নিউমোনিয়া হওয়ায় হৃদরোগের আরও অবনতি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে তিনি মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন। ১৯৯৭ সালের ১৩ই মার্চ মিশনারিস অফ চ্যারিটির প্রধানের পদ থেকে সরে দাড়ান। ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
মাদার তেরেসার জীবনী PDF
File Details :
File Name : Mother Teresa Biography
Language : Bengali
No. of Pages : 01
Size : 01 MB
Really Helpful
Heplful
Thank you,,, very helpful
good